জেলা সংবাদ

সন্ত্রাসীদের গুলিতে বাবার কোলে নিহত মেয়ের জানাজার ইমামতি করলেন গুলিবিদ্ধ বাবা

অনলাইন ডেস্ক:

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের হাজীপুরে সন্ত্রাসীদের গুলিতে বাবার কোলে নিহত তাসফিয়া আক্তার জান্নাতের (৪) জানাজা ও দাফন সম্পন্ন হয়েছে। তার জানাজার নামাজ পড়িয়েছেন চোখে গুলিবিদ্ধ বাবা মাওলানা আবু জাহের (৩৭)। জানাজা শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) বিকাল সাড়ে ৫টায় হাজীপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডে পূর্ব হাজীপুর গ্রামের মালেকার বাপের দোকান সংলগ্ন এলাকায় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় হাজীপুর ইউপি চেয়ারম্যান শাহ আজিম মির্জাসহ নিহত শিশুর স্বজন ও স্থানীয় লোকজন উপস্থিত ছিলেন। জানাজা শেষে কান্নায় ভেঙে পড়েন বাবা আবু জাহের।

বুধবার বিকাল ৪টায় বেগমগঞ্জ উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মালেকার বাপের দোকান নামক স্থানে সৌদি প্রবাসী আবু জাহেরের (৩৭) কোলে থাকা তিন বছরের শিশু জান্নাতকে শীর্ষ সন্ত্রাসী রিমনের নেতৃত্বে তার বাহিনীর সদস্যরা গুলি করে হত্যা করে। এ সময় শিশুটির বাবাও চোখে গুলিবিদ্ধ হন। আবু জাহের উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের রাশেদ মিয়ার বাড়ির মৃত জানু সরদারের ছেলে।

নিহতের মামাতো ভাই স্থানীয় ব্যবসায়ী আবদুল্লাহ আল মামুন দাবি করেন, ‘বাদশা নামের একজন ওই জায়গা থেকে ছয় ফুট মাটি কাটে। এরপর আরও মাটি কাটতে গেলে আমাদের বাড়ির লোকজন বাধা দেয়। মাটি কাটতে বাধা দেওয়ার খবর পেয়ে সন্ত্রাসী রিমন ও তার সহযোগীদের নিয়ে বাড়িতে এসে গোলাগুলি করে এবং আমার অন্তঃসত্ত্বা ভাগ্নির পেটে লাথি দেয়। তাৎক্ষণিক বিষয়টি পুলিশকে জানালে পুলিশ ওই নারীকে প্রথমে চিকিৎসা দিতে বলে।’

তিনি আরও দাবি করেন, ‘মাটি কাটার বিরোধের জেরে বুধবার বিকাল ৪টায় সন্ত্রাসী রিমনের নেতৃত্বে তার বাহিনীর সক্রিয় সদস্য রহিম, মহিন, সুজনসহ ১০-১৫ জন অস্ত্রধারী মালেকার বাপের দোকানে এলাকায় অবস্থিত আমার দোকানে এসে গালিগালাজ করে। ওই সময় আমার মামা আবু জাহের তার মেয়ে জান্নাতকে নিয়ে দোকানে আসেন চিপস আর চকলেট কিনে দেওয়ার জন্য। সন্ত্রাসী রিমন মামাকে আমার দোকানে দেখে গালমন্দ করে বলেন, তোর শেল্টারে এরা এসব করছে। এ কথা বলার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের গুলি এবং জান্নাতকে ইট দিয়ে আঘাত করে। এরপর মামা দোকান থেকে দ্রুত বের হয়ে বাড়ির দিকে যাওয়ার সময় রিমন ও তার বাহিনীর সদস্যরা পেছন থেকে পুনরায় জান্নাত ও মামাকে লক্ষ্য করে গুলি করে। এতে জান্নাত মাথায় ও কানে এবং মামা চোখে গুলিবিদ্ধ হন। এরপর এলাকাবাসী তাদের ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা নেওয়ার পথে রাত সাড়ে ৮টায় জান্নাত মারা যায়।’

বেগমগঞ্জ থানার ওসি মীর জাহেদুল হক রনি বলেন, ‘সেহরির সময় নিহতের লাশ ঢাকা থেকে নোয়াখালী পৌঁছায়। দুপুরে তার লাশ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বিকালে নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে এবং ১০-১২ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে হত্যা মামলা করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Back to top button